12 Sept 2015

ছাত্রদের নিয়ে রাজনীতি : হয়রানির শেষ কোথায়?

ছাত্রদের নিয়ে রাজনীতি : হয়রানির শেষ কোথায়?
ওয়াহিদ জামান

ক্যাম্পাসে থেমে থেমে ককটেল বিস্ফোরণ হচ্ছে (http://www.campuslive24.com/campus.104477.live24/

) ক্লাস টাইমে, রাত্রিবেলা বিস্ফোরণ হচ্ছে আবাসিক হল গুলোর আশেপাশে (http://www.campuslive24.com/campus.104445.live24/

), সরকারি দলের ছাত্রসেনারা মারধর করছে সাধারণ ছাত্রদের (http://www.campuslive24.com/campus.104483.live24/

), পুলিশ সন্দেহের অযুহাতে ধরে নিয়ে যাচ্ছে নির্দোষ ছাত্রদের (http://www.campuslive24.com/campus.104488.live24/

), এমনকি ১ম বর্ষের ছাত্রদেরকে তাদের ক্যাম্পাস জীবনের ১ম দিনেই (উদ্ভিদবিদ্যা, ৪জন - ০৩/০২/২০১৫) ধরে নিয়ে গেছে পাগলা পুলিশ, ক্রসফায়ার নাটকে নিহত হচ্ছে সর্বোচ্চ পর্যায়ের (মাস্টার্স - ক্রপ সায়েন্স, ০৫/০২/২০১৫) ছাত্র।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের জীবন আজ হুমকির মুখে, নিরাপত্তার তো প্রশ্নই ওঠেনা। এই যখন অবস্থা, তখন সরকার দলীয় শিক্ষকরা ছাত্রদের জীবনের চেয়ে ২-৩ মাসের সেশনজটকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। হঠাৎ করেই অতি মাত্রায় ছাত্র দরদি হয়ে উঠেছেন তারা। এহেন পরিস্থিতিতে ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে সেশনজট মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে চান। তাইতো কোন ছাত্র উপস্থিতি ছাড়াই পরীক্ষা নিলেন আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের (http://www.dailynayadiganta.com/details.php…

)| কি আজব দেশ! তাইনা? পরীক্ষার্থী ছাড়া পরীক্ষা অনুষ্ঠিত, আগামী বছর সকলকেই কোর্স উন্নয়ন পরীক্ষা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন বিভাগের সভাপতি। কেন এই ঘৃণ্য রাজনীতি ছাত্রদের সাথে? অভিভাবকের দায়িত্বে থাকা মানব জাতির এই কারিগররা (শিক্ষক) যদি এমন হয়, তাহলে জাতি কাদেরকে আর বিশ্বাস করবে?
বিরোধীদলের শিক্ষকরাও কম না। তারাতো আগেই ঘোষণা দিয়েছে- ক্লাস পরীক্ষা নিবেন না। যেন মামার বাড়ির আবদারি। জনগণের টাকা খেয়ে জাতির সাথে তামাশা। জনগণের জমির খাজনা, ব্যবসার রাজস্ব, প্রবাসী শ্রমিকদের রেমিট্যান্স থেকে যাদের বেতন দেওয়া হয়, সেই সব জনচাকররা কিভাবে এই ঘোষণা দিতে পারে? এসব সম্ভব কেবল বাংলাদেশেই। কারণ- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া হয় পড়ানোর যোগ্যতা দেখে নয়, রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা থেকেই। বর্তমানে বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠানের একজন পিয়ন (চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী) নিয়োগে সর্বনিম্ন যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়, ততটুকুও করা হয়না এই শিক্ষকদের নিয়োগে। সুতরাং এমন তো হবেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়- কী উন্নতি হয়েছে আপনার সময়ে? বিশ্ব র্যাং কিং-এ কয় ধাপ এগিয়েছে আপনার বিশ্ববিদ্যালয়? প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ কি সবাই পেয়েছে? নতুন কী আবিস্কার হয়েছে আপনার তত্ত্বাবধানে? নিরাপদে ছিল আপনার ছাত্ররা? জানি- এসব প্রশ্নের কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারবেন না। কিন্তু তাকে যদি প্রশ্ন করা হয়- বিরোধীদল দমন-পীড়নে আপনার কি ভূমিকা ছিল? সরকারি দলের ছাত্ররা কি নির্বিঘেœ মিছিল-মিটিং করতে পেরেছিল? মেইন গেটে কোন দলের ব্যানার টানানো ছিল? হলগুলোতে কি সকল দলের সহবস্থান ছিল? মেধা এবং জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে সিট বণ্টন হয়েছিল? শিক্ষক নিয়োগ করেছেন কোন দলের, তারা দলের রাজনৈতিক স্বার্থে মিছিল-মিটিং করবে তো? এধরণের হাজার প্রশ্নের জবাব তিনি দিতে পারবেন। কারণ- তাকে রাজনৈতিক স্বার্থে রাজনীতিকরাই নিয়োগ করেছেন।
যাক, এসব নিয়ে ভেবে আপাতত কোন লাভ নেই আমাদের। আমাদের ভাবতে হবে, ২-৩ মাসের শিক্ষাকালের দাম বেশি, না জীবনের দাম বেশি? জীবনের রিস্ক নিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা দিব, না কিছুদিনের জন্য অপেক্ষা করবো।